ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যুদ্ধরত দুই দেশের চলমান আলোচনার ধারাবাহিকতায় যুদ্ধ বন্ধ করে অবিলম্বে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি বিএনপি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইতিমধ্যেই মাত্র পাঁচটি দেশ বাদে জাতিসংঘের বিশেষ অধিবেশনে এই আক্রমণের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। মাত্র পাঁচটি দেশের বিরোধিতা ও ৩৫টি দেশের পক্ষ গ্রহণে বিরত থাকা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিশ্ববাসী এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ইউক্রেনসহ যেকোনো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মৌলিক অধিকারকে শ্রদ্ধা করে। তারা সীমালঙ্ঘনের বিরোধিতা করে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন জবাবদিহিহীন কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনমতকে তোয়াক্কা করে না। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূলের বিষয়ে জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ সরকার একইভাবে দেশবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে ভূমিকা নিয়েছিল বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে কার্যকরী অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের কর্মকাণ্ডে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাংলাদেশ সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকিতে ফেলছে।
বিএনপি মনে করে দেশবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত জনমত গোটা বিশ্বের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার বিষয়ক মূল স্রোতের সঙ্গে মিশে আছে। কিন্তু দেশের ক্ষমতাসীন সরকার জনমতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবের পক্ষে ভোটদানে বিরত থেকেছে। যা বাংলাদেশের সংবিধান ঘোষিত গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধের নীতিমালা পরিপন্থী।
ফখরুল বলেন, গত সাত দিন ধরে ইউক্রেনবাসীর ওপর রাশিয়ার অমানবিক আক্রমণের ফলে ১০ লাখ মানুষের উদ্বাস্তু হওয়া এবং শত শত নিরীহ ইউক্রেনবাসীর সঙ্গে একজন বাংলাদেশি নাবিকের নিহত হওয়ায় গভীর শোক ও উদ্বেগ ব্যক্ত করছে বিএনপি। ইউক্রেনের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধকে দেশটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করে বিএনপি। এ ধরনের আধিপত্যবাদী ও সম্প্রসারণবাদী তৎপরতা জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী অপরাধ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিএনপির চেয়ারপারসন মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান।