নতুন ঘরোয়া মৌসুমের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফেডারেশন কাপ দিয়ে শুরু হবে ২০২০-২১ মৌসুম। তবে এই মৌসুমের জন্য দলবদলের কোনো তারিখ দেয়নি তারা। দলবদলের সূচি নির্ধারণের ভার বিদায়ী কমিটি ছেড়ে দিয়েছে নতুন কমিটির কাছে। ৩ অক্টোবর নির্বাচন জিতে যারা দায়িত্ব নেবেন, তারাই ঘোষণা করবেন দলবদলের তারিখ।
গতকাল বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটির ২৬তম সভায় ক্লাব-ফুটবলারদের চুক্তি নিয়েও সিদ্ধান্ত হয়। করোনার কারণে বাতিল হওয়া মৌসুমে ফুটবলারদের সঙ্গে ক্লাবগুলোর হওয়া চুক্তির ২৫ ভাগ টাকায় হবে নতুন মৌসুমের চুক্তি। আর পুরনো চুক্তির অনাদায়ী টাকার ৪৫ ভাগ নতুন চুক্তির আগেই খেলোয়াড়দের পরিশোধ করতে হবে ক্লাবগুলোকে।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই মাঠের বাইরে ফুটবলাররা। কোনো ধরনের খেলা না থাকায় অনেক খেলোয়াড়কে দুর্বিষহ সময় কাটাতে হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে। পেশাদার লিগের ১৩টি ক্লাবও করোনার কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাঠে খেলা নেই বলে পৃষ্ঠপোষকরাও ক্লাবগুলোকে সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। দু’পক্ষই তাই চাচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব খেলা শুরু হোক। তা ছাড়া গত মৌসুমের মাত্র ২৫ ভাগ খেলা হওয়ায় ক্লাবগুলোর চাওয়া অনুযায়ী একই দলে নতুন মৌসুমে খেলার ব্যাপারে সায় আছে ফুটবলারদের। খেলা শুরু এবং একই দলে খেলার ব্যাপারে দু’পক্ষ অভিন্ন মতামত দিলেও চুক্তির ক্ষেত্রে দু’পক্ষ নিয়েছিল মুখোমুখি অবস্থান। খেলোয়াড়দের চাওয়া ছিল ২০১৯-২০ মৌসুমের পাওনা টাকার শতভাগ পরিশোধ করলে তারা একই ক্লাবে আগের চুক্তির অর্ধেক টাকায় পরের মৌসুম খেলবে। কিন্তু ক্লাবগুলো তাতে রাজি ছিল না। তাদের দাবি ছিল নতুন মৌসুমের চুক্তি হবে ২০ ভাগ টাকায়। কিন্তু গতকাল সে অবস্থান থেকে ক্লাবগুলো সরে আসে। পেশাদার লিগ কমিটির প্রধান সালাম মুর্শেদী জানান, ‘ক্লাবগুলোর লিখিত মতামত পেয়ে কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গেও কথা বলেছি। দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে নতুন চুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগের চুক্তির ২৫ ভাগ টাকায় হবে নতুন চুক্তি। আর আগের চুক্তির পাওনা টাকার ৪৫ ভাগ নতুন চুক্তির আগেই ক্লাবগুলো পরিশোধ করতে রাজি হয়েছে।’ মৌসুম শুরুর ব্যাপারে সালাম বলেন, ‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফেডারেশন কাপ দিয়ে শুরু হবে নতুন মৌসুম। এ বছর করোনার কারণে ফিফা-এএফসির অনেক খেলা বাতিল হয়ে সামনের বছর চলে যাওয়ায় আমরা চাইছি ঘরোয়া মৌসুম দ্রুত শেষ করতে। আর দলবদলের সূচি ৩ অক্টোবর বাফুফের নির্বাচনের পর নতুন কমিটি দায়িত্ব নিয়ে ঘোষণা করবে।’
সভায় লিগের ভেন্যু ও বিদেশি কোটা নিয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতবারের মতো সাত ভেন্যু এবার থাকছে না। ঢাকা ও এর আশপাশের চারটি ভেন্যুতে হবে লিগের খেলা, যাতে ঢাকা থেকে ম্যাচের দিন গিয়ে দলগুলো খেলে আসতে পারে। এর আগে বিদেশিবিহীন খেলা আয়োজনের একটা রব উঠেছিল। কিন্তু বেশিরভাগ ক্লাব পরবর্তীতে বিদেশি খেলানোর পক্ষে মতামত দিয়েছে। তবে এবার একজন কমিয়ে বিদেশি কোটা করা হয়েছে চারজন। মাঠে চারজনকেই একসঙ্গে খেলানো যাবে।
সভায় গত মৌসুমে কম চুক্তিতে খেলা তরুণ ফুটবলারদের ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কোনো ফুটবলার নতুন দলে খেলতে চাইলে কিংবা কোনো দল নতুন ফুটবলার নিতে চাইলে চুক্তিটা কীভাবে হবে, এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা দেয়নি বাফুফে। গতকালের সিদ্ধান্তগুলো সুপারিশ আকারে পেশ করা হবে বাফুফের নির্বাহী কমিটির কাছে। নির্বাচনের আগে নির্বাহী কমিটির একটি সভা আয়োজন করে এর অনুমোদন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন সালাম মুর্শেদী।







