টাঙ্গাইলেরর সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের পয়লা গ্রামের আলোচিত মনির হত্যা মামলার তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এ মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামীকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এখনও স্পষ্ট হয়নি মনির হত্যা কান্ডের নেপথ্য কারন।এক ধরনের ধোঁয়াশায় কেটে গেছে ২২ দিন।নিহত মনির(৩৫) পয়লা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর একমাত্র ছেলে।মামলার সুত্রে জানাযায়,পারিবারিক জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার বিরোধের জের ধরে গত (৪মে) মঙ্গলবার সদর উপজেলার পয়লা গ্রামের ঈদগাহ মাঠে সন্ধ্যায় মনির আহমেদকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে রেখে যায় তারই চাচাতো ভাই,একই এলাকার আশিক, আকাশ,সেলিম সহ বেশ ক’জন। পরবর্তীতে মনিরের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার শারিরিক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত (১০ মে) সোমবার সন্ধ্যা ৭.২৫ ঘটিকায় মনির মৃত্যু বরণ করেন। এ ঘটনায় নিহত মনিরের বাবা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে গত ৬ মে টাঙ্গাইল সদর থানায় চার জনকে আসামী করে এবং আরো ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত নামা করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন,যাহার মামলা নং ০৪, দীর্ঘ তিন সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও সঙ্গত কারনে আসামীরা অধরা রয়েছে। নিহতের বাবা মোহাম্মদ আলী বলেন, আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় প্রতিটা মুহুর্ত আমি এবং আমার পরিবার আতংকে দিন কাটাচ্ছি।
নিহত মনিরের মা মোনোয়ারা খাতুন বলেন, দিন গুনতে গুনতে ছেলে হত্যার তিন সপ্তাহ পার হলেও আসামীরা পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। কোন এক অদৃশ্য কারণে পুলিশ আসামীদের ধরতে গড়িমসি করছে। এ হত্যা মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।এই জীবনে আর কিছুই চাই না। আমার একমাত্র ছেলে হত্যার বিচার চাই। নিহত মনিরের স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, বিচারের রাস্তাটা স্বচ্ছ মনে হচ্ছে না। আমার স্বামী হত্যার বিচার পাবো কিনা তাও জানিনা। তার কথা মনে হলে রাতে ঘুমাতে পারি না,খেতে পারি না।আজ আমার ছোট দুটি সন্তান এতিম হয়ে গেলো,জানিনা কিভাবে বাচ্চাদেরকে মানুষ করবো। স্বামী হারানোর বেদনা কেউ বুঝলোনা। চোখের জলই সম্বল এখন আমার পরিবারের লোকজনের। এভাবেই কান্না ভরা কষ্ঠে বলছিলেন নিহত মনিরের স্ত্রী। তিনি আরও বলেন,আসামীরা এখনও পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে। তাদের ধরতে আইন-শৃক্সখলাবাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ছে না। কি কারণে তাদের গ্রেফতার করছে না তা আমার অজানা। যারা আমার স্বামীকে হত্যা করলো তাদের বিচার কি হবে না? এমন নানান প্রশ্ন প্রতিমুহুর্তে তারা করে বেড়ায় আমাদের।নিহতের স্ত্রী আরো বলেন,আমি প্রশাসনের কাজে জোড় দাবী করছি,আমার স্বামী হত্যার সকল আসামীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের বিষয়ে নিহত মনিরের বড় মামা টাঙ্গাইল পার্ক বাজার সমিতির সভাপতি,আঃ বারেক মিয়া বলেন,পুলিশ আন্তরিক হলে কোন আসামিরই এতদিন অধরা থাকার কথা নয়।আমার একমাত্র ভাগিনা মনিরের খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে,এবং আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল সদর থানার এস আই,মোঃ মনিরুজ্জামান মুন্সির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এজাহারভূক্ত আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মীর মোশারফ হোসেন মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে বলেন, এখনও তাদের গ্রেফতার করতে পারিনি। তারা আত্মগোপনে রয়েছেন। এ মামলার আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত আছে।অতি দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা অভিযুক্ত আসামীদেরকে আইনের আওতায় আনবো।