ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদীতে পুরোদমে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। কিছুকিছু জায়গায় সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিলেও বেশিরভাগ জায়গায় ইজারা ছাড়াই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বালুখেকোরা। নদীর দুইপাশে ছাগলনাইয়া উপজেলার সোনাপুর মৌজায় পড়লে ও চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার কিছু ব্যক্তি সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।

নদীতে প্রতিনিয়ত বালু উত্তলনের ফলে একপাশে ঘর-বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে অপরপাশে নদীর চর ভেঙ্গে নদীতে পরে যাচ্ছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় ভুক্তভুগীরা জানায় প্রতিদিন নদীতে বালু উত্তোলনের ফলে আমাদের ঘর ভেঙ্গে বাড়ী নদীতে পড়ে যাচ্ছে।বাড়ীর ঘরের আাশপাশ দিয়ে উঠানসহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত এবং ফাটল দেখা দিয়েছে।শুধু দিনে নয় গভীর রাতেও কাটার বসিয়ে বোড দিয়ে বালু কেটে নিয়ে যায় তারা।সোনাপুর গ্রামের বাংলাদেশ সীমান্তের শূণ্য রেখায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর পক্ষ থেকে লাল পতাকা দিয়ে সীমানা নির্ধারন করে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করা হলেও কে শুনে কার কথা।নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও রাতের আধাঁরে সেখান থেকে বালু কেটে নিয়ে আসে চোরচক্র।অভিযোগ উঠেছে কিছু বিজিবি সদস্যকে ম্যানেজ করেই রাতের আধাঁরে এসব বালু উত্তোলন করছে বালুখেকোরা।

নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে সোনাপুর গ্রামের একটি মসজিদ,কবরস্থান, ৩০-৪০ পরিবার , সোনাপুর থেকে ছাগলনাইয়া আসা যাওয়ার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ বহু ফসলি জমি ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে।ঘরবাড়ী হাঠাৎ ভেঙ্গে নদীতে পড়ে প্রাণ হানির সম্ভাবনা রয়েছে।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল্লাহ্ সেলিম জানায় নদীর চরিত্রই হল একূল ভেঙ্গে ঐকূল গড়া।

তিনি আরো বলেন নদী যেহেতু সরকার থেকে ইজারা নিয়েছে সেহেতু বালু উত্তোলন তো করবেই।আর নদীর পাড়ে ঘর-বাড়ী,সড়ক, মসজিদ, কবরস্থানসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার বিষয়ে কি ব্যবস্থা গ্রহন করবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি এবং ওনারাই ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ফেনী জেলা মুহুরী সেচ ব্যবস্থাপনা এসোসিয়েশনের সভাপতি মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বলেন সোনাপুরে একটি বাঁধ নির্মানের জন্য ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডে আমরা প্রস্তাব রেখেছি।অতি সহসায় এই অর্থবছরের মধ্যে সেখানে একটি বাঁধ হওয়ার কথা রয়েছে।এই বাঁধ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত খবরাখবর রাখছি।নদীর পাড়ে বসবাসকারী পরিবারগুলোর প্রতি যেন অন্যায় না হয় সেদিকে আমরা লক্ষ রেখেছি।স্থানীয়দের দাবী ত্রাণ নয় স্থায়ী বাঁধ চাই।অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের থেকে আমরা মুক্তি চাই।নিরাপদের নিজ বাসগৃহে বসবাস করা এটাই আমাদের একমাত্র দাবী।
বিজ্ঞাপন
