বগুড়ার শেরপুরে প্রচণ্ড গরম আর ভয়াবহ লোডশেডিং-এ নাকাল মানুষ। শহর কিংবা গ্রাম সমানতালে চলছে লোডশেডিং। শেরপুরে দিনে দুই থেকে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে।
ঘনঘন লোডশেডিং এর কারণে জনজীবন অসহনীয় হয়ে উঠছে। মিল কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে প্রচণ্ড গরমে হাসফাস করছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না থাকায় পরিবারের ছোট শিশুরা হয়ে যাচ্ছে অসুস্থ। সরকারি ঘোষনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা। বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে সাময়িক পরীক্ষা। লোডশেডিং এর ফলে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। উপজেলা এলাকায় ছোট-বড় প্রায় বিশটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে উৎপান কমতে শুরু করেছে। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে ভ্যাট-ট্যাক্স থেকে। দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রমিকরা বসে থাকায় কারখানা মালিকদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ইরি বোরো চাষের।
শেরপুর উপজেলার সিংহভাগ লোক কৃষক। ফসল উৎপাদন করে জীবন-জীবিকা চালায়। উৎপাদিত ফসল নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি ফসল বিক্রি করে দেশের খাদ্য চাহিদায় যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে আসছে যুগ যুগ ধরে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো অত্র উপজেলায় বোরো ফসল চাষাবাদ হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার একটু বেশী বোরো ফসল চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে বোরো আবাদ। বার বার আসা-যাওয়ার খেলায় সেচ সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার প্রায় ২১হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে খোজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতেই শেরপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘসময় ধরে পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবি’র লোডশেডিং থাকছে। এক-দুই ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসলেও কিছুক্ষন পর আবার চলে যাচ্ছে। দিন-রাতে মাত্র ৫-৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিললেও আবার কোন কোন সময় এরচেয়ে কম সময় বিদ্যুৎ থাকায় বোরো রোপনের জমিতে চাহিদা অনুয়ায়ী সঠিকভাবে পানিসেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ভুক্তভোগী কৃষকদের মতে, বিদ্যুৎতের ওই সমস্যার সমাধান না হলে বোরো আবাদে তারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
গাড়ীদহ মাদরাসাপাড়ার শিক্ষক লিমন হাসান বলেন পবিত্র রমজানের সাহরী এবং ইফতার,তারাবীর সময় বিদ্যুৎ পাইনা।এটা কোন যুক্তিতে মেনে নিব বুঝতেছিনা। সরকার ঘোষণা দিয়েছিলেন বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং না রাখার জন্য অথচ বিদ্যুৎ বিভাগের এমন খেলা হয়তো সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য সাবোটাজ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। চাহিদা মত বিদ্যুৎ না পাওয়ার কারণেই বগুড়ায় লোডশেডিং চলছে বলে জানিয়েছেনj সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম রথিন্দ্রনাথ বর্মন বলেন বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ার কারনে উপরের নির্দেশ অনুসারে আমরা লোডশেডিং করি। এব্যাপারে আমাদের কিছু করার নাই। এজিএম মাহমুদুর রহমান বলেন শেরপুর উপজেলা এলাকায় ৩৬/৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন অথচ সরবরাহ পাই ২৫/২৬ মেগাওয়াট, লোডশেডিংতো থাকবেই। আমাদের করার কিছু নেই তবে এটা যারা গ্রীডে কাজ করে তারা ভালো বলতে পারবে।