বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের কহিতকুল মৌজায় ১নং খাস খতিয়ানের ২২৫ দাগে ১ একর ৯০ শতাংশের একটি পুকুর মালিকানা দাবী করে হামলার ঘটনায় নারী পুরুষসহ ১৭ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কোহিতকুল মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিশালপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ নান্নু। নুর মোহাম্মদ জানান, কহিতকুল মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের ২২৫ দাগে ১ একর ৯০ শতাংশ পুকুরটি সরকারি নিয়ম মেনে ২০০০ সাল থেকে কহিতকুল মৎস্যজীবী সমিতির নামে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করা হয়।
এমতাবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ৭টার দিকে পুকুরটি নিজেদের দাবী করে মোহসিন আলী, মিজানুর রহমান ও আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে একদল দূর্বত্ত লোহার রড বাটাম এবং লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে করে ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বিশালপুর ইউপির ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি অভিযুক্ত মোঃ আবু তালেব জানান, পুকুরটি খাস সম্পত্তি নয়। বতর্মান সময় সকল খাস সম্পত্তির তথ্য ইন্টারনেট সার্চ করলেই পাওয়া যায়। ইন্টারনেট সার্চ করে দেখুন ওই সম্পত্তি খাস বরং আমাদের নামে রেকর্ড খুজে পাবেন। মূলত ওই পুকুরটি ছিল জমিদারদের। আমার বাবা দাদারা জমিদারদের নিকট থেকে পুকুরটি লিজ নিয়েছিল এবং জমিদারদের দেওয়া খাজনার রশীদ এখনো আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। পরবর্তীতে জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলে বাবা দাদারা খাজনা খারিজ করে নিয়ে ভোগ দখল করে আসছিল। এরই ধারণকারীকতায় ৬২ এর রেকর্ড মিস হয়ে যায়। তখন আমরা আইনের আশ্রয় নিয়ে তৎকালীন সরকার পক্ষ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। সেই সময় আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেয়। এসব কিছুর পেপারসপত্র আমাদের আছে। কিন্তু ১৯৯৯ সালে আওয়ামী সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালে অভিযোগকারী নান্নুর পরিবারের প্ররোচনায় তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রয়াত ফেরদৌস জামান মুকুল ক্ষমতার জোড়ে প্রথম এই পুকুর ডাকে উঠায়। ওই সময়ে নান্নুরা আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। এরপর ২০০১ সালে বিএনপির শাসনামলে আমার চাচা বর্তমান প্রয়াত আয়েন উদ্দিন পুণরায় পুকুরটি দখলে নেয় এবং ভোগ দখল করতে থাকে। ক্ষমতার পালাবদলে আবারও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পরে আমাদের বিভিন্ন ভয়ভীতি এবং হুমকিধামকি দিয়ে আবারও পুকুরটি দখলে নিয়ে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন লোকজন ভোগ করেছে।
আমরা বিভিন্ন সময় এসিল্যান্ড অফিসে ধরণা দিয়েও প্রতিকার পাইনি।৫ আগস্টে পটপরিবর্তনের পরেও আওয়ামীলীগের দোসরদের সঙ্গে বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী নান্নু দখলবাজি চাঁদাবাজি করে বেড়াচ্ছে। আবু তালেব আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ১৯৯৯ সালে ওই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল অভিযোগকারী নান্নুর পরিবার। কারণ তখন তাঁরা আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল। বিএনপিতে নিজের নাম লিখিয়ে নান্নু বতর্মানেও দখলবাজি চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান জানান,সরকারী ইজারাভূক্ত পুকুর মালিকানা দাবী করার সুযোগ নেই। ওসি সাহেবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস,এম মইনুদ্দিন বলেন, ঘটনা জানার পরই পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। বতর্মানে তদন্তাধীন রয়েছে এবং দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।