১ অক্টোবর থেকে ময়মনসিংহে শুরু হয়েছে নুরুল আলম আতিক পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ সিনেমায় অভিনয় করছেন আশনা হাবীব ভাবনা, জ্যোতিকা জ্যোতি, আশীষ খন্দকার, দোয়েল’সহ আরও অনেকে। নাসির উদ্দীন ইউসুফের গল্পে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ সিনেমাটির কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক নিজে। এর আগে ২০১৬ সালের মার্চে সিনেমাটির শ্যুটিং শুরু হয়েছিল। তখন শ্যুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন জ্যোতিকা জ্যোতি, দোয়েলসহ অনেকেই।
নতুন পর্যায়ে শ্যুটিং নিয়ে আতিক জানান, গৌরীপুরে শ্যুটিং চলছে। বেশ ভালোভাবেই এখানে কাজ করতে পারছি। এই লটে ৮ তারিখ পর্যন্ত শ্যুটিং করব।
আতিক বলেন, ‘সিনেমার ভাষা হচ্ছে ‘গ্লোবাল ল্যাঙ্গুয়েজ’। সেখানে আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে সিনেমায় নিজেদের ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করা। বলা যায়, আপন ভাষার সন্ধানে কাজ করবে এ চলচ্চিত্রটি। বাংলা সিনেমায় যে দুর্গতি চলছে, তা থেকে সিনেমাকে উদ্ধারের একটি প্রচেষ্টা হবে এটি।’
গল্পের বিষয়-বিন্যাস ও নির্মাণ মিলিয়ে আতিকের নাটক নতুন ভাষ্য তৈরি করে। তিনি দার্শনিক অভিব্যক্তি যুক্ত করেছেন বাংলাদেশের টেলিভিশন নাটকে। যার প্রকাশ অনেকটা সিনেমার বড় ক্যানভাসের সঙ্গে তুল্য। লম্বা ক্যারিয়ারে মাত্র একটি সিনেমা নির্মাণ করায় অনুরাগীরা প্রায়ই অনুযোগ করেন। চতুর্থ মাত্রা, সাইকেলের ডানা, এ জার্নি বাই বোট, বিকল পাখির গান, কুসুমের চারপাশ, একটা ফোন করা যাবে প্লিজ-এর মতো টিভি ফিকশন নির্মাণ করেছেন আতিক। সর্বশেষ ঈদুল আজহা উপলক্ষে নির্মাণ করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘পতঙ্গ শিকারী ফুল’। ২০১০ সালে নির্মাণ করেন প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি ‘ডুবসাঁতার’। বর্তমানে মুক্তির অপেক্ষায় আছে দুই সিনেমা ‘পেয়ারার সুবাস’ ও ‘মানুষের বাগান’।
‘পেয়ারার সুবাস’ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাঙালির বৈবাহিক যৌনজীবনে পুরুষের আধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার গল্প পেয়ারার সুবাস। যা প্রায় প্রতিটি বাঙালি নারীর বৈবাহিক যৌনজীবনের অভিজ্ঞতাকে উপস্থাপন করবে। ছবিতে জয়া আহসান কেন্দ্রীয় চরিত্রে। এছাড়াও তারিক আনাম, আহমেদ রুবেল, সুষমা সরকারসহ আরও অনেকেই ছবিটিতে আছেন।’
নানা জটিলতায় দীর্ঘ চার বছর আটকে থাকলেও শিগগিরই পেয়ারার সুবাস মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানালেন আতিক। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রায় ১১ বছর পর মুক্তি পাবে আতিকের নতুন কোনো সিনেমা। দীর্ঘ বিরতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেছি, হয়নি। না হলে আর কী করব! বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমার প্রজেক্ট পছন্দ হয়নি প্রডিউসারদের। চেষ্টা তো করেছিই। কাজ তো করতেই চাই, এবং নিয়মিতই করতে চাই। কিন্তু প্রডিউসারকে কনভিন্স করার যে বিষয় থাকে, সেটা আমি পারি না। অন্যরা পারে। আর কী ধরনের বিষয়-আশয় নিয়ে সিনেমা হবে, সেটাও তো আমার ইচ্ছেতে হয় না। প্রডিউসারের চাওয়ারও গল্প আছে। তাদের পছন্দ, অপছন্দেরও ব্যাপার থাকে।’
করোনাপরবর্তী পরিস্থিতিতে সিনেমার শ্যুটিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনাপরবর্তী সময়ে কী হবে ইন্ডাস্ট্রির বা আমরা কী করব সেটা বলা খুবই মুশকিল। কারণ আমরা জানি না, কবে নাগাদ করোনা থেকে মুক্তি পাব। এ কারণে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। আমি মনে করি করোনাপরবর্তী সময়ে আমাদের অনেক বেশি অনলাইননির্ভরতার পরিস্থিতি তৈরি হবে, হচ্ছে। বিকল্প পথে হাঁটবে বিনোদন দুনিয়া। আশঙ্কা করি, সহসাই করোনা থেকে আমাদের মুক্তি মিলবে না। তারপরও কাজে নামতে হচ্ছে, কাজ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে সব ধরনের সতর্কতা মেনেই শ্যুটিং করছি আমরা।’