ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেজে ‘মা ইলিশ রক্ষায় যৌথ সামুদ্রিক সহযোগিতা’ শিরোনামে একটি পোস্ট দেওয়া হয় একদিন আগে। সেখানে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক জলসীমার কাছাকাছি অবস্থানরত ভারতীয় মাছধরা নৌকাকে সে দেশের সীমানার দিকে চালিত করছে।
আরও বলা হয়, মা ইলিশ রক্ষায় এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের চলমান প্রচেষ্টায় সহায়তা করার লক্ষ্যে ভারতীয় কোস্ট গার্ড আন্তর্জাতিক জলসীমার কাছাকাছি ভারতীয় মাছধরা নৌকা সরাতে নজরদারি বৃদ্ধি করছে।
সঙ্গে যোগ করা হয়, জেলে পল্লিগুলোতে কমিউনিটি ইন্টিগ্রেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর কাজও করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে ১৪ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ২২ দিনের জন্য ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে, যা চলবে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত।
বাংলাদেশের জেলেরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে— ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা মাছ ধরতে না পারলেও সমুদ্রের সীমান্ত এলাকায় ভারত ও মিয়ানমারের জেলেরা মাছ ধরে এবং কখনো কখনো ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের ভেতরেও।
এখন ভারতীয় হাই কমিশন বলছে তাদের টহলে থাকা স্থল ও বিমান ইউনিটগুলো আন্তর্জাতিক জলসীমার কাছাকাছি অবস্থানরত সমস্ত ভারতীয় মাছধরা নৌকাকে নিজেদের সীমানার দিকে পাঠাচ্ছে।
বাংলাদেশে জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির একজন রবীন্দ্রনাথ বর্মণ বিবিসিকে বলেন, “ভারতীয় জেলেদের সঙ্গেও এ নিয়ে আমাদের কথাবার্তা হয়েছে। আমাদের নৌ বাহিনী ও কোস্ট গার্ড চেষ্টা করে, কিন্তু তারপরেও মাঝে মধ্যেই তারা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ে এ সময়ে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বারবার এসব সমস্যার কথা জানিয়েছি। কিন্তু সমাধান নেই।”
আরও বলেন, তিনটি দেশই যদি এক সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা না দেয়, তাহলে এটি কোনো ফল আনবে না।
মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ শাখার উপপ্রধান মাসুদ আরা মমি বলেন, “জেলেরা আমাদের বলে যে আমরা মাছ ধরতে পারি না, অথচ অন্যরা এসে নিয়ে যায়। দু’দেশের সংশ্লিষ্টরা সামনে যে আলোচনায় বসবেন তখন এসব বিষয় আসবে নিশ্চয়ই।”
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ভারতীয় জেলেদের বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ে মাছ আহরণের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার জন্য ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে মৎস্য মন্ত্রণালয়।
এমনকি ভারতীয় হাই কমিশনের ফেইসবুক পেজে মা ইলিশ রক্ষায় যৌথ সামুদ্রিক সহযোগিতার কথা বলা হলেও এ ধরনের কোনো উদ্যোগের খবর জানা নেই বাংলাদেশের মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। এ কথা বলা হয় বিবিসির প্রতিবেদনে।
অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলছেন, সমস্যাটি ভারতকে বিভিন্নভাবে অবহিত করা হয়েছে। এখন তারা তাদের সীমানায় নিজেদের জেলেদের সরাতে কাজ করতে পারে।