ঢাকা জেলা পরিষদের অর্থায়নে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নের কুমারবাড়িল্যা এলাকায় ইছামতী নদীর তীরে একটি ঘাটলা নির্মাণের প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলেও তা এখনো ব্যবহার করতে পারছে না জনসাধারণ। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, তবে কার স্বার্থে নির্মাণ করা হলো এ ঘাটলা।
গত শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, ইছামতী নদীর পাড় ঘেঁষে ঘাটলাটি নির্মাণ করা রয়েছে। তবে ঘাটলায় ওঠার কোনো রাস্তা নেই। পাশেই একটি গাছে সাঁটানো রয়েছে সাইনবোর্ড। তাতে লেখা রয়েছে, ‘ঢাকা জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে কুমারবাড়িল্যা কাজীবাড়ি ঘাটলা’। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাওহীদ এন্টারপ্রাইজ।
স্থানীয়রা জানায়, ইছামতী নদীর পানি ব্যবহার করার জন্য কুমারবাড়িল্যা কাজীবাড়ির ঘাটে ঘাটলাটি নির্মাণ করা হলেও রাস্তা না থাকায় লোকজন এটি ব্যবহার করতে পারছে না। ফলে নির্মাণের পর থেকে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এটি। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এখানে ঘাটলার কোনো দরকারই ছিল না। তারপরও এমন ঘাটলা বানানো হলো যে উঠতে হলে মই দরকার। সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে এ ঘাটলা নির্মাণ করল কার স্বার্থে?
এলাকার বাসিন্দা বাদল কাজী বলেন, ‘গোসলসহ বিভিন্ন কাজে ইছামতীর পানি ব্যবহার করে স্থানীয়রা। সেই লক্ষ্যে ঢাকা জেলা পরিষদের অর্থায়নে এ ঘাটলা নির্মাণ করা হলেও রাস্তার অভাবে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। প্রায় তিন বছর যাবৎ ঘাটলাটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’
আমেনা বেগম নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘কাপড়চোপড় ধোয়াসহ দৈনন্দিন অনেক কাজ নদীতে করতে হয়। ঘাটলাটি তৈরি করা হলেও আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। শিগগিরই ঘাটলায় যাওয়ার রাস্তা তৈরি করা দরকার।’
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘ঘাটলাটির প্রকল্প আমি দিয়েছিলাম। ঘাটলার নিচে যে মাটি নেই এ বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে এখন শুনলাম, অল্প সময়ের মধ্যে আমি মাটি ভরাট করে দেব।’
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাওহীদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. কালামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঢাকা জেলা পরিষদের উপপ্রকৌশলী মোতালেব খান বলেন, ‘ঘাটলার বরাদ্দ ছিল, তাই নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের মাধ্যমে একটি প্রকল্প তৈরি করে মাটি ভরাট করা হবে।’
বারুয়াখালী ইউপির চেয়ারম্যান আরিফ সিকদার বলেন, ‘আমি শুনেছি, আমার ইউনিয়নে এরকম একটি ঘাটলা নির্মাণ করা হয়েছে। তবে মাটির অভাবে কেউ ঘাটলাটি ব্যবহার করতে পারছে না। শুধু জেলা পরিষদ নয়, যে কেউ কাজ করুক না কেন, নিজ নিজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়ে কাজ করলে ভালো হয়। উভয়ের সমন্বয়ে ভালো কাজ হলে জনগণ উপকৃত হবে।’