ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নে অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে ফসলি জমি। রাতের আধাঁরে একের পর এক কেটে নিচ্ছে বিভিন্ন মানুষের ফসলি জমি।কিছু জমি মলিকরা বিক্রি করলেও বাকি জমি জোর করে অবৈধভাবে কেটে নিচ্ছে বালু খেকোরা।ধ্রুত মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার হুমকিতে এলাকাটি। ভুক্তভূগীদের অভিযোগ এই কাজের সাথে জড়িত রয়েছে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি। ক্ষতিগ্রস্থ জয়ারানী দাস, রমজান আলী,অর্জুন কুমার দাস, মোঃ ফারুক, রিনা,গৌরী রাণী দাস ও শ্যামল চন্দ্র দাস জানায় শুভপুর ইউনিয়নের জয়চাঁদপুর মৌজায় প্রতি রাতে ২০-৩০ টি কাটার (বালু কাটার মেশিন)নিয়ে এসে বিভিন্ন মানুষের জমি কেটে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা।ছোট ফেনী নদী থেকে প্রায় আধাকিলোমিটার ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন মালিকের ফসলি জমি কেটে নিয়ে যাচ্ছে তারা।জমির মালিকরা বাধা দিতে গেলে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয় ।ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো আরো জানায় গত ছয় মাসে প্রায় একশত পঞ্চাশ একর ফসলি জমি কেটে নিয়ে গেছে।আরো দুই হাজার একর জমি কেটে নেয়ার হুমকিতে রয়েছে। ভুক্তভূগীরা আরো জানায় বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে জানালেও কোন প্রতিকার পাইনি এবং তারা কোন ধরনের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। জমি কাটার ফলে সেখানে হুমকিতে রয়েছে প্রায় একশ পরিবার, তিনটি মসজিদ,মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ১৫ পরিবার, জয়চাঁদপুর আশ্রায়ন প্রকল্পের ৩৫ পরিবার, নবনির্মানাধীন বাংলার বীর সমশের গাজী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, শুভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,মুসলিম পাড়া নুরানী মাদ্রাসা,শুভপুর ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসা,শুভপুর শ্রী শ্রী দক্ষিনশ্বরী কালী মন্দির,রাধাকৃঞ মন্দির, একশত আট হিন্দু পরিবারের শ্নশান। স্থানীয় এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো আরো জানায় এখানকার ফসলি জমিগুলোতে ধান চাষের পাশাপাশি মৌসুমী ফসল ও শীতকালীন শাকসবজি চাষ করা হত।স্থানীয়দের গৃহপালিত পশুর চারণভূমি ছিল এই জমিগুলো। এখানে ধানের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষি কাজের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে পিলার স্থাপন করলেও সেই পিলারগুলি মাটি কাটার কারনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।বর্তমানে ভূমিদস্যুরা এসব জমিগুলো রাতের আধাঁরে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভূগী পরিবারগুলো জানায় আমাদের জমি এবং বসতভিটা ধ্বংস হয়ে গেলে নতুন করে ঘরবাড়ি বানানোর মত সামর্থ্য আমাদের নেই।আমাদের পৈত্রীক সম্পদ চলে গেলে আমরা কোথায় যাব? উক্ত বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল-হাসান গণমাধ্যমকে বলেন সরকারের অনুমোদন ছাড়া এক ইঞ্চি মাটিও কারো কাটার কথা না।এই কাজ যারা করছে তারা অবৈধভাবে করছে। ইউএনও এবং এসিল্যান্ডকে আমি এগুলো বন্ধ করার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা দেব।প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন থেকে হলেও ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে মোবাইল কোর্ট করাব।ইতিপূর্বে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়েছিলাম প্রয়োজনে আবার পাঠাব। স্থানীয় এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্থদের একটাই দবী তাদের পৈত্রিক সম্পদ, বসতভিটা, এবং ধর্মীয় স্থানগুলো মাটি খেকোদের কবল থেকে রক্ষা করা।