ফেনীর ছাগলনাইয়া ইউএনও অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুল হুদার বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ছবি সম্বলিত ব্যানার সবজি বাগানে অসৌজন্যমূলকভাবে প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে সচেতন মহলে ক্ষোভের ঝড় উঠে । জাতির সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিরা অভিযুক্তের যথাযথ শাস্তির ও দাবি জানান। তারা বলেন বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করা মানে পুরো জাতিকে অসম্মান করা। বঙ্গবন্ধুকে কটুক্তি করা আমরা কোন অবস্থাতে মেনে নিতে পারছিনা। তাকে চাকুরীচ্যুত করা দরকার। একটি স্বাধীন সার্বভৌম মানচিত্রের সাথে যিনি জড়িয়ে রয়েছেন এবং এই ভূখন্ডের প্রতিটি ধুলিকণার সাথে রয়েছে যার সম্পর্ক তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।এই বিশেষ ব্যক্তির ছবি যখন অসম্মানজনকভাবে সবজি বাগানের নিরাপত্তা বেস্টনী হিসেবে ব্যবহার করা হয় ঠিক তখনি বিষয়টি সচেতন মহলে নাড়া দেয়। এছাড়াও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুল হুদার বিরুদ্ধে হট ভাটা,বেকারী, হোটেলসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও স্থান থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।মহামায়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা লিটন ও রাধানগর ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী সালমা আক্তার জানায় তারা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন কাজে অফিসে আসলে ঘুষ ছাড়া সে কাজ করেনা এবং তাদের কাছে টাকা দাবি করে।

তার কথামত না চললে ধাক্কা দিয়ে সেবাভুগীদের অফিস থেকে বের করে দেয়। পৌর শহরের পশ্চিম ছাগলনাইয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির আহাম্মদ মজুমদার মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জমি ভূমিদস্যুদের কবল থেকে রক্ষার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করলে নুরুল হুদা বিষয়টি মীমাংসার জন্য এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করে।মুক্তিযোদ্ধার কাছে ঘুষ দাবির বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসক,বিভাগীয় কমিশনার ও মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে মুক্তিযোদ্ধারা। উক্ত বিষয়ে ২৫ জানুয়ারী ইউএনও এর কার্যালয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।এসময় সে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তার অপরাধের জন্য ক্ষমা চায়। ছাগলনাইয়া পৌর সভার মেয়র এম. মোস্তফা গণমাধ্যমকে জানান এই কাজের জন্য আমি তীব্র নিন্দা জানাই।প্রশাসনিক কর্মকর্তা হলে তার জ্ঞানশূণ্যতা আছে।সে দীর্ঘদিন থেকে এখানে ভিত্তি প্রস্তুত করেই এই অপকর্মগুলো করে।আমার কাছে অনেকগুলো তার অপকর্মের খবর আছে।অবৈধ কাজকর্মই বেশি করা হয় এখানে।আমরা এখান থেকে অতিসত্বর তার অপসারণ চাই।জাতির জনকের ছবির যে অবমাননা করেছে তার একটা শাস্তি হওয়া উচিত। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব নিজাম উদ্দীন মজুমদার জানায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুল হুদা এখানে দীর্ঘদিন যাবত রয়েছে।তার আচরনে সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত।তাকে এখান থেকে ধ্রুত বদলি করা একান্ত জরুরী।উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বলেন যার জন্ম না হলে বাংলাদেশটাই পেতাম না। বঙ্গবন্ধু এখন একটি ব্যক্তি নয় প্রতিষ্ঠান। বঙ্গবন্ধুর ছবি যত্রতত্র ব্যবহার করার কোন সুযোগ নেই। সে যেই হোক, যেই পর্যায়ের নেতা কর্মী হোক, যেই পর্যায়ের অফিসার হোক যারা বঙ্গবন্ধুর ছবির অবমাননা করেছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোমায়রা ইসলাম বলেন, বিষয়টি আসলে দুঃখ জনক প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুল হুদার সবজি বাগানে অসৌজন্যমূলকভাবে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার প্রদর্শনের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি, তদন্ত করব এবং অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব। ইতিপূর্বে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এবং সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বদলী করা হলেও কয়েকদিন দায়িত্ব পালন করে আবার এখানে চলে আসে। এছারাও বহু অপরাধের সাথে জড়িত প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুল হুদার একই স্থানে প্রায় ১৭ বছর দায়িত্ব পালন থেকে অন্যত্র বদলী ও শাস্তির দাবি করেছে মুক্তিযোদ্ধা,রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ভুক্তভুগীরা।এবিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য তার কার্যালয়ে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। কার্যালয়ের দরজা তালাবদ্ধ দেখা যায়।এবং তার ব্যবহৃত মুঠো ফোনে ফোন দেয়া হলে রিসিভ করেনি।