পাল্টা হামলা চালিয়ে রাশিয়ান বাহিনীর কাছ থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলের দুই হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি আয়তনের এলাকা দখলমুক্ত করার দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শনিবার গুরুত্বপূর্ণ শহর ইজিয়ুম ও কুপিয়ানস্কে দ্রুতগতিতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অগ্রসর হয়েছে। তবে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, শহর দুটির বাইরেও লড়াই চলছে।
কিয়েভের এক কর্মকর্তা বলেন, ইজিয়ুমের কাছে কয়েকটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে ইউক্রেনীয় বাহিনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। খারকিভ অঞ্চলে ৩০টির বেশি শহর ও গ্রাম দখলমুক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা নিজেরাই ইজিয়ুম ও কুপিয়ানস্ক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। দোনেৎস্কে লড়াইরত বাহিনীর শক্তি বাড়াতে বালাকলিয়া শহর থেকে সেখানে সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথাও নিশ্চিত করেছে তারা। শুক্রবার বালাকলিয়া শহরে প্রবেশ করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
এদিকে খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার গঠন করা প্রশাসনের প্রধান তার এলাকার মানুষের জীবন বাঁচাতে তাদের রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, সীমান্ত পারাপারের এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি। রাশিয়ার সীমান্ত অঞ্চল বেলগোরোদের গভর্নর বলেছেন, সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষারত মানুষদের খাবারদাবার, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
তার মানে, ইউক্রেনের শক্তিশালী আক্রমণের মুখে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান শহরগুলো থেকে পিছু হটছে রাশিয়ান বাহিনী। সামরিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অঞ্চলগুলো ছেড়ে দেয়ার কথা জানিয়েছে মস্কোও। এর মধ্য দিয়ে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
এদিকে ইউক্রেনের বালাকলিয়া, ইজিয়ুম ও খেরসেন অঞ্চল থেকে রুশ সেনাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মস্কো জানায়, রুশপন্থি সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তাসহ সামরিক অভিযান নতুন করে ঢেলে সাজাতেই ওই অঞ্চলগুলো ছেড়ে দিয়েছে তারা। এ অবস্থায় সেখানে নিজেদের এগিয়ে নিতে সৈন্য সংখ্যা আরও বাড়াচ্ছে রাশিয়া। শনিবার খারকিভের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় চলে রকেট হামলা। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হন।
বিশ্লেষকদের ধারণা, খারকিভ বা তার আশপাশের অঞ্চলে রুশ সরবরাহ লাইন ভেঙে দিতে পারলে বেকায়দায় পড়বে রাশিয়া। এতে করে অনেক রুশ সেনা অবরুদ্ধও হয়ে পড়তে পারে। এ ছাড়া ওই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ইজিয়াম শহরটি ইউক্রেনের দখলে আসলে তা রুশ সেনাদের ভোগান্তি কয়েকগুণ বাড়াবে।
খারকিভে পিছু হটার মধ্যেই শনিবার মস্কোর ঐতিহাসিক রেড স্কয়ারে আতশবাজির আয়োজন করা হয়। রাজধানী ঘোষণার ৮৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে এ মনোমুগ্ধকর আতশবাজির পাশাপাশি দিনটি উপলক্ষে গালা নাইটে বক্তব্য দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।