সারা দেশে বুধবার ঈদুল আজহা পালিত হবে। যারা গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদ্যাপন করবেন তারা গত কয়েক দিন যাবৎ বাড়ি ফিরছেন। সোমবার কর্মজীবীদের শেষ কর্মদিবস থাকায় বিকেল থেকেই রাজধানীর বাস, ট্রেন ও নৌ-টার্মিনালগুলোতে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। আর মঙ্গলবার ঈদের আগের দিন সকাল থেকে সড়কে চাপ আরও বেড়েছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৃষ্টির বিড়ম্বনা।
এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে রাজধানী থেকে বের হওয়ার রাস্তাগুলোতে পাশাপাশি লেনে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। সড়কে এক পাশে গাড়ির চাপে দীর্ঘ জট। ঠিক উল্টো পাশে হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষা করলেও রাস্তায় নেই গাড়ি।
ঈদের ছুটির পাশাপাশি এবার ২৩ জুলাই থেকে পালিত হতে যাচ্ছে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এ সময় অফিস-পরিবহনের পাশাপাশি শিল্প-কারখানাও বন্ধ থাকবে। এ কারণে কয়েক দিন ধরে রাজধানীর সড়ক ও পরিবহনে ভীষণ চাপ।
মঙ্গলবার সরেজমিনে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় দেখা যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে রাজধানী থেকে বের হওয়ার দিকে ভয়াবহ যানজট। যার শেষ প্রাপ্ত হোটেল রেডিশন ওয়াটার গার্ডেনকে ছুঁয়েছে। কুড়িল ফ্লাইওভারের ওপর থমকে আছে গাড়ি। সেখানে যাত্রীবাহী আন্তঃজেলা বাস থেকে, রাজধানীর বিভিন্ন রুটে বাস, পণ্য বোঝাই ট্রাকসহ ব্যক্তিগত যানবাহন ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে।
সড়কের অন্য পাশে ঠিক উল্টো চিত্র। বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ফেরার জন্য অনেক মানুষ অপেক্ষা করলেও সায়েদাবাদ, গুলিস্তান যাওয়ার মতো পরিবহন পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু বাস নয়, সংকট রয়েছে সিএনজি বা অ্যাপ চালিত রাইডের।
গত পাঁচ দিনে দেশ রূপান্তরের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে সরকার লকডাউন শিথিল করলে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় যাত্রীর চাপ বাড়ে এবং সড়কে যানজট ছিল দীর্ঘ সময়। পরের দুদিন পূর্ণ কর্মদিবস থাকায় ঘরমুখো মানুষের তেমন চাপ লক্ষ করা যায়নি। তবে গতকাল সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার গ্রামে ফেরা যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় থাকবে বলে মনে করেছেন বাস, ট্রেন ও নৌ-টার্মিনালের কর্মকর্তারা।
তারা বলেছেন, যারা প্রথম তিন দিনে করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন, তাদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। রীতিমতো যুদ্ধ করে টিকিট করেও বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। গাড়িতে উঠেও অপেক্ষা করতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অনেক চেষ্টা করে যারা টিকিট পাননি তাদের ভোগান্তি আরও বেশি ছিল। এই তিন দিনের ভোগান্তিটা শুরু হয়েছিল গাড়ি চলার পর থেকেই। মাঝপথ থমকে ছিল গাড়ি। ৪ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লেগেছে ১০-১২ ঘণ্টা। তবে গত রবিবার রাজধানীতে চাপ না থাকলেও আগের তিন দিনের জেরে গাড়ি নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেনি।
এ দিকে সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর মহাখালী, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। সকাল থেকে যাত্রী কম থাকলে বিকেলে উপচেপড়া ভিড় ছিল। বেশিরভাগ টিকিট কাউন্টারে দীর্ঘ লাইন ছিল। লোকাল বাসের কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। আর স্পেশাল সার্ভিসের গাড়িগুলো সড়কে যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে আসতে না পারায় যাত্রীরা গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন।