ছড়িয়ে পড়া অডিও সম্পর্কে রাজিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ নারগিস রুমা বলেন, ‘অডিওটা আমি শুনেছি।’
সিটের জন্য রিভাকে টাকা দিতে হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেই রুমে থাকা মেয়েগুলো ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছে। এটা ঠিক যে টাকাগুলো তারা রিভাদের দেয়নি। তাদের দেয়ার কথাও না। সে কী চাচ্ছে, সেটি আমার বলাটা ঠিক হবে না।’
প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘ওর সঙ্গে আমরা বসব, কথা বলব। উত্তেজনাবশত অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। ওরা আমাদের সন্তানের মতো, তারা ভুল করতে পারে। ভুলটা আমরা সংশোধনের চেষ্টা করছি।’
ভুল করে শিক্ষার্থীদের এভাবে শাসাতে পারেন কি না জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘হ্যাঁ, তারা যদি কোনো প্রেশার ক্রিয়েট করে বা টাকা-পয়সা দাবি করে, এটা নৈতিক না।’
ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য জোর করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই ছাত্র আন্দোলন অনেক আগে থেকেই চলছে। ছাত্ররাই সবকিছু প্রতিষ্ঠা করে।’
ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া আর ছাত্র আন্দোলন এক জিনিস কি না জানতে চাইলে নারগিস রুমা বলেন, ‘আমি সব সময়ই বলি, কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে গেলে যাবে, নয়তো যাবে না। জোর করাটা ঠিক না। আমি তাদের নিয়ে বসব।’
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘হয়তো আমাদেরই ভুল। আমরা আমাদের সন্তানদের ঠিকভাবে শিক্ষা দিতে পারছি না। আমরা সেটা চেষ্টা করছি।’
রিভা চাইলে সবকিছু পারেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘রিভা যে বলছে সে চাইলে কাউকে নামাতে পারবে বা ওঠাতে পারবে, এই জিনিসটা ভুল। এটা ঠিক না। আমরাই কাউকে প্রয়োজন অনুযায়ী এক সিট থেকে আরেক সিটে নিয়ে যাব।’
কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা নিজের কানে কিছু শুনিনি। অডিওতে অনেক কিছু অ্যাড করা যায়।’
অডিওটা নিজের বলে রিভা স্বীকার করে নিয়েছেন। তা অধ্যক্ষকে জানালে তিনি বলেন, ‘আমাদের সব ছাত্রী আমাদের সন্তান। পরিবারে আমাদের ছেলেমেয়েরাও নানান সময়ে নানান কিছু করে থাকে। তাদের যেমন আমরা মাতৃস্নেহে রাখি, তেমনি শিক্ষার্থীদের ব্যাপারেও আমাদের মানসিকতা সেটাই।’
কলেজ প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে দেয়া বক্তব্যের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হোস্টেল সুপাররাই বিষয়টি দেখবেন।’
এদিকে শুক্রবার মধ্যরাতে রিভা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া পোস্টে ছড়িয়ে পড়া অডিওটির জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীর সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। এরা আমার পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কিছু নয়। একান্ত ব্যক্তিগত পরিবেশে হলেও দায়িত্বশীল জায়গা থেকে অসংযত ভাষার প্রয়োগ আমার অপরাধ হয়েছে বলে আমি স্বীকার করছি।
‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আমাকে এমন শিক্ষা দেয় না। তাই সংগঠনের প্রতি আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’