জয়া আহসানের শুরুটা নব্বই দশকে। মডেলিং দিয়ে। তারপর নাটক। নাটকের দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ২০০৪ সালে দেখা দিলেন রুপালি পর্দায়। কখনো শায়লা হয়ে, কখনো রেনুবালা হয়ে কেড়ে নিলেন দর্শকের মন। আবার জারা শিকদার হয়ে নাচলেন বাণিজ্যিক সিনেমায়। কয়েক বছর ধরে তিনি দর্শক মাতাচ্ছেন ওপার বাংলাতেও। সমসাময়িক অন্য নায়িকাদের বয়স যখন হু হু করে বাড়ছে তখন দুই বাংলার আবেদনময়ী এ নায়িকার বয়স কমছে। দিন যত যাচ্ছে তার বয়স তত কমছে। রুপালি পর্দায়, সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় তার প্রাণচঞ্চল হাসির তোড়ে মোহমুগ্ধ ভক্তরা।
অথচ কী আশ্চর্য! তার সমবয়সী অনেক নায়িকা এখন অভিনয় করেন মায়ের ভূমিকায়। জয়ার এ তারুণ্যের পেছনের রহস্য কী? তার শরীর সচেতনতা, কঠোর পরিশ্রম, নিয়মিত ব্যায়াম। নিজের ফিটনেস ধরে রাখতে তার কসরতের অন্ত নেই। সেসব কসরতের কিছু কিছু বিষয় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শেয়ার করেন জয়া। তবে করোনাকালীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জয়ার ওয়ার্ক আউটের ছবি দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তার ভক্তরা।
জয়া বলছিলেন, ‘লকডাউনে মন মানসিকতা ওরকম না থাকায় তেমন রূপচর্চা করিনি। বেঁচে থাকার প্রশ্ন নিয়েই সবাই বেশি উদ্বিগ্ন ছিলাম। যদিও আমি লাইফস্টাইলে বিশ্বাস করি। ন্যাচারাল লাইফস্টাইলই বেশি ফলপ্রসূ।’ করোনাকালীন তিনি সময় কাটিয়েছেন ঘরে বসেই। বললেন, ‘একটা সময় মানুষ ছাড়া চলতে না পারলেও এখন মানুষের মুখ দেখা ছাড়াই চলে যাচ্ছে জীবন। লকডাউনে ঘরে বসে থাকতে থাকতে এখন আর বাইরেও যেতে ইচ্ছে করে না। আগের মতো সেজন্য বাইরেও খুব একটা বের হচ্ছি না।’ কলকাতার নতুন সিনেমা ‘ছেলে ধরা’য় কাজ করতে যাচ্ছেন জয়া আহসান। বলছিলেন, ‘শিলাদিত্য মল্লিকের পরিচালনায় এ সিনেমার শ্যুটিং শুরু হবে অক্টোবর থেকে। আমার সঙ্গে আছেন অনুরাধা মুখার্জি, প্রান্তিক ব্যানার্জি ও ইশান মজুমদার। “ছেলেধরা”র গল্প আবর্তিত হবে এক মদে আসক্ত মায়ের গল্পে যার মেয়ে অপহরণের শিকার হয়। ঘটনাক্রমে অপহরণকারীর ছেলেকে দেখে ফেলেন তিনি। একসময় সেই ছেলেকে জিম্মি করেন। গল্পটা এরকমই।’
এছাড়াও কলকাতার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেপরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর একটি মুভিতে জয়া কাজ করতে যাচ্ছেন। মুভির নাম ‘অসতো মা সদগময়’। করোনা পরিস্থিতি ফ্রেমে তুলে ধরবেন জয়া আহসান ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এদিকে ঢাকা শহর থেকে কুকুর তাড়ানোর প্রতিবাদে সচেতনতামূলক একটি ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছিলেন জয়া। এর আগে লকডাউনেও তিনি পথকুকুরদের মাঝে খাবার বিলিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে প্রাণীবান্ধব। প্রকৃতি এবং প্রাণী আমার ভীষণ দুর্বলতম স্থান। এ লকডাউনে খেয়াল করেছি, পথকুকুররা কান্নাকাটি করছে, এর জন্য আমার বাসারটাও ঘুমাচ্ছে না। পরে লকডাউনের ভেতরেই বাসার কাজের সহকর্মীকে নিয়ে পথকুকুরদের খাবার খাইয়েছি। অনেক দিন রাত ৭-৮টা পর্যন্তও ওদের খাইয়েছি। রাস্তায় ঘুরেছি। তারা আমাদের প্রাচীনতম বিশ্বস্ত বন্ধু। তাদের দেখভালের দায়ভার আমাদেরও। সেজন্য টুকটাক কিছু করি। অনেকেই এদের নিয়ে কাজ করছে তাদের সাধুবাদ জানাই। এ কারণে একটা প্রোগ্রামেও অংশ নিয়েছিলাম। আসলে কুকুরদের প্রতি আমার আলাদা অনুরাগ আছে।’ নন্দিত পরিচালক নুরুল আলম আতিকের ‘ডুব সাঁতার’ দিয়েই চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়েছিল জয়া আহসানের। এ পরিচালকের ‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমাতেও কাজ করেছেন তিনি। বাঙালির বৈবাহিক যৌনজীবনে পুরুষের আধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার গল্প পেয়ারার সুবাস। যা প্রায় প্রতিটি বাঙালি নারীর বৈবাহিক যৌনজীবনের অভিজ্ঞতাকে উপস্থাপন করবে। সিনেমাটির পোস্ট প্রোডাকশন চলছে। শিগগিরই মুক্তি পাবে পেয়ারার সুবাস। জয়া বলেন, ‘পেয়ারার সুবাস গল্পটি আমার অনেক পছন্দের। সিনেমাটি শিগগিরই মুক্তি পেতে যাচ্ছে, এটা নিঃসন্দেহে আনন্দের সংবাদ।’